ভালোবাসা এবং অভিযোগ

একদিন ভালোবাসা ছিলো সীমাহীন অনন্ত আকাশের মতো, ফেনিল সমুদ্রের উপচে পড়া ঊর্মিমালার মতোই ছিলো ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
একটু অভিমানে দুচোখে বন্যায় প্লাবিত হতো, তোমার উপস্থিতিতে সৈকতে আঁছড়ে পড়তো ভালোবাসার নুড়ি পাথর।
সবকিছু ঠিকঠাক মতোই চলছে, তারপর হুট করে ভালোবাসি কথাটায় অনন্ত অভিযোগের ফিরিস্তি চলে আসে।
অভিমানের পাহাড় জমে জমে বুকের ভেতর স্তূপ জমেছে।
ভালোবাসার প্রবলতা চাপা পড়ে থাকে অভিযোগের আড়ালে।

তুমি আমাকে আর আগের মতো ভালোবাসো না, আগের মতো তোমার ভালোবাসার পাগলামি আমি দেখতে পাই না, আগের মতো আমার নাম্বার ব্যস্ত পেলে তুমি আর রাগ করো না, আগের মতো সারারাত অনলাইনে থাকলে তুমি উথাল পাথাল করে দাও না কিছু।
তাহলে কি তুমি বদলে গেছো!
এই অভিযোগের ফিরিস্তি নামা রোজ রোজ তুমি আমাকে শোনাও।
আচ্ছা কি মনে হয় তোমার,
ভালোবাসা ঠিকঠাক চলছে বলেই কি কেবল আমরা ভালোবাসি, খারাপ লাগা মুহূর্তে কি আর ভালোবাসি না।
এমন অদ্ভুত দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ার কি কোন মানে হয়।

সম্পর্কের একটা পর্যায়ে অল্প স্বল্প নীরবতা আসে, আগের মতোই সমানতালে উচ্ছাস প্রকাশ হয় না, আগের মতো ভালোবাসি ভালোবাসি বলে চিৎকার করে বলা হয় না, সারারাত ধরে চ্যাট করা হয় না, কথা বলা হয় না।
তার মানে কি ভুলে গেছি?
নিঃশেষ হয়ে গেছে তবে ভালোবাসা।
আচ্ছা তুমি ভালোবাসার মাঝে এত দাঁড়ি, কমা, ব্যবচ্ছেদ কেন করো।
প্রকাশের দৃষ্টিভংগি শুরুতে যেমন ছিলো মাঝামাঝিতে তার ধরণ কেবল বদলেছে।
কিন্তু ভালোবাসা আগের মতোই রয়ে গেছে।
আগের মতোই হৃদয়ে ভালোবাসা জমে রয়েছে।

ভালোবাসা মাঝে মাঝে আমাদের পরীক্ষা নেয়, কে কতোটুকু ভালোবাসি? কে কিভাবে প্রকাশ করি ভালোবাসা? খারাপ সময়ে আমরা কি পরস্পরকে ভালোবাসি? ভুল বুঝাবুঝি হলে আমরা তা মিটিয়ে আবার সহজেই কাছে আসতে পারি কিনা? এতসব প্রশ্নের মুখোমুখি “ভালোবাসা” মাঝে মাঝে আমাদের দাঁড় করাবে!
তুমি আমি দুজনের দৃষ্টিভংঙ্গী আলাদা, আমরা দুজনেই চাইবো ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ আমাদের নিজেদের মতোই হোক,
এ চাওয়ার মাঝে অন্যায় নেই।
ছোট ছোট ভুল বুঝাবুঝিতে নীরবতা মানায় না। সব ভুলে ভালো বাসতে না পারলে ভালোবাসা নিজেই পরাজিত হয়ে যায়।

-নিলয় আহমেদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *