স্মৃতির সুবাস!!

 

কুয়াশায় ভেজা মাটির সোঁদা সোঁদা গন্ধ,

কিংবা নতুন আলোর কোমল স্পর্শ!
বিষন্ন বাতাসে ভাসে স্মৃতির সুবাস,পিছু ডাকে সোনালি শৈশব!
বড় বেশী আনমনা করে সর্ষে ক্ষেতের উন্মাতাল ঘ্রান,
হলুদ ফুলের মনকাড়া আমন্ত্রণ,
শীতের শীর্ণ শুকনো খড়কুটো,
বিরহী হাওয়ায় হু হু করে জেগে ওঠে
পুরানো পাঁচালি,যা রয়ে গেছে আলগোছে বুকের সোপানে ঘাসফুলের মতো সিক্ত হয়ে,শিশিরের মতো নোনাজলে ভিজে।

হিজল ফুলের পথ মাড়িয়ে,
থোকা থোকা অন্ধকার
যেখানে লুকোচুরি খেলে অহর্নিশি,
আড়মোড়া ভাঙে দুপুরের হলদে আলোয় কাঠবিড়ালি,
ঝিঁ ঝিঁ পোকার একটানা রিনরিনে সুর,
মস্তিষ্কের নিউরনে ঝড় তোলে,
অতীতের এ্যালবাম খুলে বসে খোলা আকাশ!
এ আমার একান্ত ভাবনার ক্যানভাস ,
সেখানে শুধু জল রঙ ছবি আঁকি,
নিরন্তর আমি।

সেই স্মৃতির লোবানে সুবাসিত শৈশবে
কুমড়ো ফুলের সতেজ রঙে রাঙানো দীঘল দিন,
টুপটাপ ঝরে পড়া সময়ের নৈঃশব্দে,
ইশারায় শীষ দিয়ে যায়,হৃদয়ের গোপন বাঁশীতে—
মাছরাঙার ঐ উৎসুক শীতল চোখ,
যে শান্তজলে ঢেউ তুলে যায়,একটুখানি ছোঁয়া দিয়ে!
আমিও আনমনা হই, নিস্তরঙ্গ ভাবনায় দোলা লাগে,
মনে হয় যেন অতল দীঘির গোপন কুঠুরিতে কতকাল বন্দী আমার মনপাখীটা।

স্মৃতি তখন ডাক দিয়ে যায়,
পথ হারাতে কিশোরবেলার শাপলা বিলে।
শ্যাওলা পরা পুকুরপাড়ে,আজও যেনো শৈশব কাঁদে।
দখিনা বাতাসে শীতের আহ্বান, ঝরা পাতা ঝুলে আছে বির্বন শাখে,
অনেকটা পথ পার হয়েও যেনো,
ঘাসফড়িঙের পিছু পিছু মন ছুটে যায়!

হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো যেনো নীল আকাশে ছবি আঁকে,
একটা কাশফুলের মতো নিরন্তর দোল খাওয়া জীবন,
একটি নদী বইছে যেনো নিরবধি,ছুঁয়ে বুকের সোপান।

এক জনমে নয়,যেন শত জনমে ধরে
দিবানিশি হাতছানি দেয়,
সোনালি শৈশবের লাল ফিতে
বেলোয়ারি চুড়ি,জোনাকিপোকার টিপ
আর দুরন্ত মনে ছুটে চলা ঘাসফড়িঙের পিছু!
কিংবা ভালোবেসে ঘুড়ি ওড়ানো, হেমন্তের ঐ নীলাকাশে।।

-হাছিনা মমতাজ ডলি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *