অনেকদিন পর আবার তোমাকে দেখলাম এক বর্ষণ মুখর সন্ধ্যায়,
এক ছক ভাঙ্গা সন্ধ্যায় যখন অবিরত বর্ষণে কাকভেজা অবস্থায় দাঁড়িয়ে একটু ছায়া খুঁজছিলাম, ঠিক তখনি তুমি পাশ কেটে গেলে এদিক সেদিক না তাকিয়ে।
ভুলে গেলাম আমি বৃষ্টিতে ভিজে একাকার, কেবল অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছি তোমায়।
তুমিতো আগের মতোই দেখতে, চেহারা একটু বদলায়নি,
সেই আগের মতো উদাসী পথ চলা, বিষণ্ণ ঠোঁটে শুধু এক চিলতে কৃত্রিম হাসি, চোখের কোণে এক ফোঁটা অশ্রু, কিছুই একটুও বদলায়নি।
তবে সবাই কেনো বলে, ভীষণ পাল্টে গেছো তুমি!
আচ্ছা তোমার কি মনে আছে বকুলদের বাড়ির পেছনে কামিনী ফুল গাছগুলোর কথা, যেখানে তুমি আমি বসে কত দুষ্টুমি না করতাম!
আচ্ছা কামিনী গাছগুলো কি আমাদের অপবাদ দিয়েছিলো, নির্বিচারে তার পাতা ডাল ভেঙ্গে আমরা কত অত্যাচারই না করতাম,
ঘাসে সবুজ গালিচা, গাছে ঘেরা পাহাড়, আঁকাবাঁকা পথ কত নীরব নিস্তব্ধ রাত আমাদের কালের স্বাক্ষী।
সব হারিয়ে গেছে প্রয়োজন আর বাস্তবতার কাছে।
মনে আছে কি তোমার?
সঞ্চিতাদের বাড়ীতে পূজা উৎসবের কথা, সজীবদের দীঘির পারে রথমেলা, বাজারের পাশে বসা ঈদমেলা কিংবা অলকদার গানের আসর,
একবার মনে আছে, তুমি রাত জেগে গানের আসর শেষে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলে কি এক অজানা ভয়ে,
আচ্ছা অলকদা এখন কোথায়?
সঞ্চিতা কি এখনো ভালোবাসে অলকদাকে,
আর ঐ যে স্বপ্নপুরির মেয়ে জলপরি এখন কোথায় আছে,
যে তিনবার জলে ডুবে ডুবে বেঁচে গিয়েছিলো সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আচ্ছা এখনো ও কি তোমার ছোট ছোট কথায় অভিমান হয়, এখনো ও কি লাজ রাঙ্গা ঠোঁট কেঁপে উঠে তার অবহেলায়?
এখনো ও কি আগের মতো তোমার আসমান ভরা থাকে মেঘে,
এখনো ও কি অশ্রু চোখে তাকিয়ে তাকে ভালোবাসি বলো।
এখনো ও কি তুমি আমাদের সেই কফির দোকানে রোজ রোজ একই জায়গায় বসো,
এখনো ও কি আমায় ভেবে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখে অস্থির থাকো।
আচ্ছা তুমিও কি আমার মতো করে এখনো ভাবো?
এখনোও কি বিষণ্ণ আকাশে তাকিয়ে উদাস নয়নে আমাকে খুব করে খোঁজো?
জানো কি?
তুমি আজও আছো আমার কল্পনা জুড়ে, ডাইরির পাতা জুড়ে, আমার দীর্ঘশ্বাস জুড়ে, আমার সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে।
-নিলয় আহমেদ