যখনই তুমি আমার মূর্ছিত ভাবনা জুড়ে কিংবা অলীক দিবাস্বপ্নে হঠাৎ উদিত হও
জানিনা কেন প্রত্যেকবার পুরোনো
নীল পাখি কাঁথাস্টিচের সেই সুতি শাড়িটি পরে একবয়েসি মুখাবয়ব নিয়ে সামনে এসে দাঁড়াও আলুথালু প্রসাধনবিহীন
যেন বিগত আটাশ বছর ধরে একটা সুতি শাড়ি পরে রয়েছ তুমি
অথচ ঘরমোছার কাজে বহুব্যবহারে জীর্ণবিশীর্ণ বিবর্ণ ছেঁড়া ন্যাকড়া হয়ে মহার্ঘ শাড়িটি অ্যাদ্দিনে হয়তো ফেলেই দিয়েছ সিটি কর্পোরেশনের নরক গুলজার ডাস্টবিনে
অথবা দিয়ে দিয়েছ কী যেন নাম কাপড়কাচার ওই কটুগন্ধী মেয়েটিকে যে আমার চিঠি পৌঁছে দিত তোমায় শাহী জর্দা দেওয়া মিষ্টি পানের বিনিময়ে
খেয়ে না খেয়ে টিউশনির টাকা দিয়ে হুট করেই কিনেছিলাম তোমার জন্য নিমা আনাম কালেকশনের বাজেটীয় রেঞ্জ থেকে
অনেকক্ষণ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছিলাম শাড়িটা
যেন বহতা অংশমালীর পাঠোদ্ধারকৃত অবোধ্য সিন্ধুলিপি
তিনি হেসে বললেন আপনার উনি বোধহয় শ্যামল বরণ- লম্বা চওড়া আর আমার মতোই মুখরা হবেন
শেক্সপিয়র থেকে শচারেক বছর পরের বলেই হয়তো সে অব্দি আমি তোমার তেমন কেউ হয়ে উঠতে পারিনি কিংবা মুখচোরা তুমিও আমার …
তুমিতো তখন শাড়িটি নিতেই চাওনি
কারণ বাড়িতে গিয়ে কী বলবে তোমার ধরিত্রীর মতো ছায়াপ্রহরী মাকে আর কী করেই বা সামলাবে ছোট দুবোনের আনুবীক্ষণিক জিজ্ঞাসু দৃষ্টির সুতীক্ষ্মতাকে
মিথ্যেটা যে কখনোই রপ্ত করতে পারোনি তুমি
যেমন রপ্ত করতে পারোনি ভালোবাসার একটি বাক্যও গত আটাশ বছর দুশ ছাপ্পান্ন দিনে
তোমার আপাতসরল অভিব্যক্তির অপাপবিদ্ধ উত্তরাধুনিকতা নন্দনতাত্ত্বিক দূরত্বে ঠেলে দিয়েছে এই আমায় পিঠ চাপড়ানো কৌশলী কবিতায়
অথচ নীল পাখি কাঁথাস্টিচের একটা পুরনো সুতি শাড়ি পরে অবলীলায় কাটিয়ে দিলে তুমি গত আটাশটি বছর
মাহফুজ আল-হোসেন