নীল চুড়ি ( ভালোবাসা দিবসের বিশেষ গল্প )

মেয়েরা শেষপর্যন্ত নীল চুড়িতেই কুপোকাত হয়?

আর ছেলেরা সেটা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দেখে!

অসম্ভব সুন্দর কোন দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে দেখার মাঝে কোন দোষ নেই।

বাহ! এরপর তো দেখছি চুড়ির রিনিঝিনি আওয়াজ শোনার আব্দারটাও করে বসবেন।

সেটা কি ফ্রিতেই পাওয়া উচিত নয়?

থামুন থামুন! পুরুষ জাতির এই এক সমস্যা। একটু লাই দিলেই মাথায় উঠে বসে।

তা আর হলো কই! আমার তো আবার এক্রোফোবিয়া আছে। উঁচুতে উঠতে বড্ড ভয়। একান্তই যদি উঠতে হয় তাহলে আপনার হাত ধরে ওঠা ছাড়া যে কোন উপায়ই নেই!

এত সহজ?

খুব একটা সহজ বোধহয় হবেনা। মেয়েদের হাত ধরার অভ্যেসটা না থাকায় আমার কাঁপুনিতে মই উলটে পড়ে দুজনেরই একসাথে হাত পা ভাঙার চান্স আছে। তার চাইতে বরং একসাথে উড়ে গিয়ে….

ওমা! উড়ে যাওয়ারও ব্যবস্থা আছে নাকি?? তাও আবার একসাথে???

না মানে বলছিলাম কি! ভালোবাসা নামক একটা জিনিস আছে যা নিজে উড়তে পারেনা, কিন্তু মানুষকে উড়াতে পারে। আর আমরা দুজনেই যেহেতু শুকনা পাতলা, সো ভালোবাসা নামক উড়ন্ত যানে দিব্যি এঁটে যাব।

অপরিচিত একটা মেয়েকে মুহূর্তেই পটিয়ে ফেলার কাজটাতো ভালোই পারেন দেখছি। এবার দেখা যাবে হাতে চুড়ি পরানোর ক্ষেত্রে আপনার দক্ষতা কতটুকু।

ঠিক বুঝলাম না!

তা আর বুঝবেন কেন!! কথার মায়াজাল ছড়াতে গিয়ে আপনার সামনে যে একটা অর্ধ সুন্দরী নারী চুড়ি হাতে নিয়ে কতক্ষন ধরে কারো পড়িয়ে দেওয়ার অপেক্ষাতে দাঁড়িয়ে আছে সেটা যে আপনার চোখ এড়িয়ে গেল!

কিছু একটা বলতে গিয়ে থেমে যায় বাদল। পরবর্তী দশ সেকেন্ড তার জীবন থেকে বোধহয় হারিয়েই গেলো। অনর্গল কথা বলতে থাকা লোকটার হঠাৎ চুপ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা নিয়ে বিজ্ঞানীরা ঢের গবেষনা করতে পারে। তবে আমাদের কোন গবেষনার দরকার নেই। আমরা বরং নীল চুড়ি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা রুমকীর চোখের দিকে তাকাতে পারি। সেখানে বাদলের ফাঁসির মঞ্চের স্পষ্ট উপস্থিতি আমাদেরকে জানিয়ে দেয় বাদলের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ার সময় চলে এসেছে। যেহেতু ফাঁসির মঞ্চের আশেপাশে সাধারন মানুষের থাকার অনুমতি নেই তাই আমরা বরং দূরে সরে গিয়ে সবকিছু নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হতে সাহায্য করি।

-রুমেন আহমেদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *