লেখা আজ বেশ সাজুগুজু করেছে। শাড়ীটা কমলা আর কলাপাতা সবুজ ডুরে। কপালে একটা টিপ সেঁটে দিতে দিতে গুনগুন করে লেখা। কতদিন পর একটু সময় নিয়ে সাজ!
এয়ারপোর্টের রাস্তাটা আজকাল চলাচলের অযোগ্য। রাত হতেই ট্রাক নামে দলেদলে…
রাস্তাটাও কেমন বদলে গেছে। আভিজাত্য নিয়ে বনসাইগুলো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে…
আজ তমালকে নিতে লেখাই এসেছে। তমাল প্রায়শই যাতায়াত করে দেশ বিদেশ।গার্মেন্টস ব্যবসা… বেশ ফুলে ফেঁপে উঠছে।
ব্যস্ত তমালের কত কিছুই মনে থাকে না। লেখা জানে আজকের দিনটিও তমালের মনে নেই। যুগল চলার আজ দশ বছর।
গাজীপুরে তমালের গার্মেন্টস। সকাল সকাল বেড়োতে হবে… লেখা তখন খুব ঘন হয়ে আছে! তমালের চোখে আলোর ঝলকানি।
গাজীপুর
————
বিদেশ থেকে বায়ার এসেছে। গ্রীনভিউ রিসোর্টে লাঞ্চ শেষ করে মিটিং শুরু।
সিরাজ মিয়া ঘুরঘুর করছে। গাজীপুরে সিরাজ মিয়া তমালের ডান হাত।
… স্যার এবার আর গতবারের মত ভুল হবে না! সিরাজ মিয়ার পান খাওয়া দেঁতো হাসি।
এবার পরী এনেছি স্যার।
তমাল বিরক্তি নিয়ে তাকায়।
… রাতে বুঝবো! এখন যাও! তমাল কাজে মন দেয়।
বায়ারদের একেক রকম বাহানা,একেক রকম চাহিদা। এসব পূরণের জন্যই তো সিরাজ মিয়ার এত কদর!
লাল পানি পেটে পড়তেই দুনিয়াটা রঙিন। তমাল দরজা খুলে রুমে ঢোকে।
সিরাজ মিয়া সাথে করে পরী নিয়ে এসেছে। শুধু হুকুমের অপেক্ষা…
মেয়েটার মাঝারী গড়ন। পেছন থেকে দেখা যাচ্ছে। টাইট জিনস আর টি- শার্ট… চুলগুলো খোলা।
তমাল চোখ দিয়ে ঈশারা করে।
মেয়েটা এগিয়ে আসে… বেশ সপ্রতিভ। এমন মেয়েই তমালের পছন্দ। তমালের সুরে সুর তুলতে পারে এরা….
অনেকদিন পর দেখলেও চিনতে কষ্ট হয় না তমালের! নিঝুম! নিঝুম! তুমি এত বড় হয়ে গেছো! নিঝুম সবেগে একটা ধাক্কা খায়!
ছিটকে বের হয়ে আসে নিঝুম। তারপর সোজা চলে যায়….
তমাল ঘটনার আকস্মিকতায় মুচড়ে যায়।
লেখার বড় ভাইয়ের মেয়ে নিঝুম এবার থার্ড ইয়ারে পড়ে। লেখার কাছেই শোনা….
টেবিলে ভাত বেড়ে লেখা গল্প করছে। তমাল দুপুরে ফিরেছে ঢাকায়। নিঝুমের একটা বিয়ে দেখে তো… ভাইয়ের বয়স তো অনেক হলো।
তুমি তো অনেকদিন দেখো নি নিঝুমকে…. চলো একদিন যাই!
…. ভাতগুলো এত শক্ত কেনো? তরকারীতে এত লবন! তমালের ভীষণ রাগ হয়! ভীষণ….
-ফারহানা নীলা