বিবাহ ( সেকাল-একাল)

চৌচালার নীচে, পাটাতনের তাকে
সিঁড়ি দিয়ে দাদি ওঠে,
উৎসাহী নাতনী সাথে জোটে।
পুরাতন ট্রাঙ্কের ভিতর পাওয়া যায়,
দাদির বিয়ের শাড়ি, কাজলদানি,
পাউডার আর সুগ্নদ্ধির কৌটা,
রূপার ফ্রেমে আয়না।
নাতনী হেসে কুটি কুটি, বলে,
” দাদি, আয়নার পেছনে লেখা,
মুখ দেখানি আয়না, এ কেমন বায়না!”
দাদি বলে, ” হেসোনা তবে শোনো,
যখন বিবাহ ঠিক হয়,
পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয়- স্বজন,
কাছারি ঘরে সারাদিন চালায় গান বাজনা।
কত হাসা হাসি, মিষ্টি ভোজন, কত সাজনা।
চলে ঘর সাজানো, আলপনা আঁকা,
নানান বাজনা।
আমি রই এক ঘরে,
ফল ফলাদি, রস, খাই যা পেটে ধরে,
প্রতিদিন গায়ে হলুদ,
রোগ বালায়ের সুরক্ষা পরে।
তারপর বিবাহের আসরে,
সকলে মিলে কত রসা রসি
আর ঐ আয়না খানি আমার মুখে ধরে।
সেই প্রথম তোর দাদারে দেখি ,
যুবতী এই আমির দেহের অর্ধেক
যুবক, সুপুরুষ একি!
সে দেখায় কি ছিল, কি বলব দিদি,
প্রথম প্রেমের তরঙ্গে তোলপাড় সমস্ত আমার হ্রদি।
সুখের সংসার ছিল মোদের,
ছিল না কলহ, বিবাদ, না ছিল দুঃখ, খেদের।
আজিকার নাটকে দেখি, পুস্তকে পড়ি,
এতো জানাজানি, এতো দেখাদেখি,
মুখ দেখানির আয়না প্রয়োজন আর কি?
গায়ে হলুদ ত হয়না কোনো,
হয় ছোঁয়া কপালে, গালে, লোক দেখানো ।
বিয়ার আসরে কোন বস এলো,
যে আসবে কাজে,
আত্মীয়ের দল মিছেই খাওয়ার খরচ, সব বাজে।

সারাদিন নাই নাই,
সারাক্ষন চাই চাই,
সংসার ভরা খেদ, কলহ, বিভেদ,
কেমনে হবে সর্ব প্রথম
প্রেমহীন বুক জুড়ে জেদ।

মনে রেখো,
বিবাহ খুলে দেয় স্বর্গ প্রবেশ দ্বার,
মিলনেই জীবন পরম্পরা,
তায়ে তুষ্টে অন্তর বিধাতার।

-গিনি ইসলাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *