এক রহস্যময়ী রাত ও নারীর গল্প (পর্ব-১)

সন্ধ্যা থেকেই আকাশের মুখ ভার। ঘন অন্ধকারের চাদরে ঢেকে আছে চারপাশ। বজ্রগর্ভ মেঘের আনাগোনাই বলে দেয়—ভয়াবহ ঝড়-বৃষ্টি হবে—এতে কোনো সন্দেহ নেই। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট শহর সাভানাসহ আশেপাশের এলাকায়  ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা গতকালই জানিয়েছিল জর্জিয়া রাজ্যের আবহাওয়া দপ্তর। আটলান্টিক মহাসাগরের উপর যে ঘূর্ণাবর্তটি তৈরি হয়েছিল তা ইতোমধ্যেই নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। পাশের রাজ্য ফ্লোরিডার লাগোয়া এলাকা থেকে জর্জিয়ার মধ্যভাগে রয়েছে নিম্নচাপটি। মৌসুমি অক্ষরেখাও এখন ওই নিম্নচাপ এলাকা হয়ে আটলান্টিক পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।‌ 
 
ফাহিম তার স্টুডিয়ো অ্যাপার্টমেন্টের জানালার পর্দা সরিয়ে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল বাইরে। আজ কাজে বের হবে কি না তাই নিয়ে সে দ্বিধায় আছে। ঘরে একা একা বোরিং বসে থাকার চেয়ে বরং কিছু রাইড পেলে সময়টাও কাজে লাগল, হাতে কিছু টাকাও এল। তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফাহিম গাড়িতে গিয়ে বসল।

উবারের ড্রাইভিং অ্যাপটি চালু করে দিয়ে এগিয়ে চলল সাভানা ডাউন-টাউনের দিকে। শনিবারের সন্ধ্যা—বেশ কিছু রাইড মিলবে এই ভরসায় সে এগিয়ে চলল।

ফাহিম শখ করে উবার চালায়। মূলত সময় কাটানোটাই তার প্রথম উদ্দেশ্য। পেশায় সে একজন ইঞ্জিনিয়ার। ভাল বেতনের একটি চাকরি তার আছে। উবার না চালালেও কোনো ক্ষতি নেই, কিন্তু ঘরে বসে টিভি দেখে আর ফেসবুকিং করে আর কত সময় কাটে? তাই সাপ্তাহিক ছুটির দু’দিন উবার চালায় ফাহিম—কয়েক ঘণ্টার জন্য। 

রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত গাড়ি চালিয়ে বেশকিছু রাইড সে পেল কিন্তু সমস্যা হল রাইডগুলো সব ছোটো ছোটো। বেশিরভাগই এক নাইটক্লাব-বার থেকে আরেকটাতে, যেগুলোর দূরত্ব ১ থেকে ২ মাইলের মধ্যে। সাভানা ডাউনটাউন এমনিতেই অনেক ছোটো। অনেকগুলো রাইড পেয়েও তার তহবিলে যা জমা হল তা মোটেও সন্তোষজনক না। যদিও তাতে তার মন খারাপ হলো না। তার সময়টা ভালোই কেটেছে। সে তার অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধ্বান্ত নিল। বাসায় যেয়ে নেটফ্লিক্সে একটা মুভি দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়বে। তাছাড়া আবহাওয়াও খুব একটা ভালো না। এ অঞ্চলে ঘোষণা ছাড়াই উথালিপাথালি ঝড়-বৃষ্টি হয়। 

ফেরার পথে যদি কোনো রাইড পাওয়া যায় সেই ভেবে সে উবার অ্যাপটি চালু রেখেই রওয়ানা দিলো আর ঠিক তখনই একটা রাইডের কল এলো। গাড়ির গতি কমিয়ে রাইডের অবস্থান জেনে নিয়ে ২ মিনিটের মধ্যেই যথাস্থানে গিয়ে হাজির হলো।

ফাহিমের গাড়িটি একটি জনারণ্য বারের সামনের রাস্তায় এসে দাঁড়াতেই ছুটে এল অপরূপ সাজগোজ করা চপলমতি একটি তন্বী শ্বেতাঙ্গিনী তরুণী। প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরা যৌবনের উজ্জ্বল একটি শিখা যেন। বয়েস আনুমানিক বাইশ কি তেইশ। পরনে কালো রঙের স্কার্ট—হাঁটু অবধি নামানো। নিচের অংশে কিছুই নেই। অন্ধকারের মধ্যেও ক্ষিনাঙ্গী ধবধবে সাদা দু’খানি পা জ্বলজ্বল করছে। অপূর্ব তার অঙ্গ লাবণ্য। মোবাইল ফোনে মেয়েটির নাম দেখল ফাহিম—লিসা রজার্স। 

দরজা খুলে মেয়েটি চকিতে গাড়ির পেছনের সিটে উঠে বসল। মেয়েটি কোনো কথা বলল না। সাধারণত প্যাসেঞ্জার গাড়িতে উঠে দু’একটি সৌজন্যমূলক কথা বলে। ফাহিম লক্ষ করল, মেয়েটির ফরসা মুখে কেমন বিষাদের ছায়া। সাধারণত রেস্টুরেন্ট-বারে ফূর্তি করতে আসা ছেলে-মেয়েরা সবসময় উৎফুল্ল থাকে। খই ফুটতে থাকে তাদের মুখে সারাক্ষণ।

ভদ্রতার খাতিরে ফাহিম বলল, ‘লিসা?’

‘ইয়েস।’

‘হাই, দিস ইজ ফাহিম।’

‘হাই।’ মৃদূ কণ্ঠে বলল মেয়েটি।

‘আমরা কোথায় যাচ্ছি?’ যদিও উবার অ্যাপেই সব তথ্য দেয়াই ছিল, তবুও ফাহিম জানতে চাইল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শুক্রবার আর শনিবার রাতে রেস্টুরেন্ট কিংবা বার থেকে যারা একটূ টিপসি হয়ে বের হয়, তারা প্রায়ই ঠিকানা ভুল করে। 

‘জ্যাকসনভিল!’ মেয়েটি বলল।

‘জ্যাকসনভিল? আই মিন জ্যাকসনভিল, ফ্লোরিডা?’

‘ইয়েস।’ 

‘সে তো অনেকদূর!’

ফাহিম মেয়েটির দেওয়া গন্তব্যের ঠিকানা নেভিগেটরে এন্ট্রি করে সার্চ দিতেই তার কপালে চিন্তার রেখা দেখা দিল। এই অঞ্চলে সে নতুন বিধায় বিভিন্ন জায়গার দূরত্ব সম্পর্কে তার সম্যক ধারণা ছিল না। বিপত্তিটা ঘটল সেখানেই। সাভানা থেকে জ্যাকসনভিলের দূরত্ব দেখাচ্ছে ১১৫ মাইল। সময় ২ ঘণ্টা ৩ মিনিট। 

ফাহিম চিন্তিত কণ্ঠে বলল, ‘এক্সিকিউজ মি, লিসা। আমার আসলে বুঝতে ভুল হয়েছে। আমি তো এতদূর যেতে পারব না। তাছাড়া ওয়েদারও ভাল নয়। তুমি বরং আমার রাইড ক্যান্সেল করে দিয়ে অন্য কাউকে নাও। আমি ভীষণভাবে দুঃখিত।’ হাইওয়েতে ওঠার আগেই রাস্তার পাশে ফাহিম গাড়ি থামিয়ে দিয়ে ভিউ মিররে তাকাল লিসার দিকে। যদিও অন্ধকারে তার প্রতিক্রিয়া তেমন বোঝা গেল না। 

‘তোমাকে ভাড়া দ্বিগুণ করে দিব। আমি আসলে অনেক বিপদে পড়েছি। এর আগে চারজন আমার রাইড ক্যান্সেল করেছে। আমাকে রাতেই ফিরতে হবে। প্লিজ আমাকে ফেভার করো। প্লিজ!’ফাহিম এবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল মেয়েটির দিকে। ভাল মত লক্ষ করে সে জানতে চাইল, ‘তুমি এসেছিলে কীভাবে?’

একটু নীরব থেকে মেয়েটি বলল, ‘আমার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে।’

‘তাহলে একা ফিরে যাচ্ছ যে? তোমার বয়ফ্রেন্ড কোথায়?’

এ কথার কোনো উত্তর না দিয়ে মেয়েটি জানালা দিয়ে তাকাল বাইরের দিকে। হঠাৎ তার চোখ দুটি চিকচিক করে উঠল। সে শব্দ করে কেঁদে ফেলল। কাঁদতে কাঁদতেই তাকাল ফাহিমের মুখের দিকে। কিন্তু কিছুই বলল না। সে হাতের ছোট পার্স থেকে একটা টিসু বের করে চোখ মুছে নিল। কিন্তু সেই অঝর ধারার জলপ্রপাত থেকে জল গড়ানো বন্ধ হলো না। 

ফাহিম গভীর চিন্তায় পড়ে গেল। সে বুঝতে পারছে না কী করবে। মেয়েটি যেভাবে কাঁদছে—নিশ্চয়ই তার সঙ্গে এমন কিছু ঘটেছে যার ধাক্কা এই তরুণীর আবেগী মন কিছুতেই মানতে পারছে না। তবে এই আবেগ বেশিক্ষণ স্থায়ীও হবে বলে মনে না। বেশিরভাগ সময়েই তরুণী কিংবা যুবতী মেয়েদের হঠাৎ আসা আবেগ হঠাৎ চলে যায়।

ফাহিম তাকাল সামনের দিকে। হঠাৎ হঠাৎ ছুটে চলা দু’একটি গাড়ির হেড লাইটের আলো আর মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকের আলো ছাড়া আর কিছুই দৃষ্টি গোচর হচ্ছে না। 
ফাহিম অস্থিরতায় ভুগছে। এভাবে কতক্ষণ বসে থাকবে। মেয়েটা নিজে থেকে না নেমে গেলে তাকে গাড়ি থেকে নেমে যেতেও বলতে পারছে না। তবুও সে ইনিয়ে বিনিয়ে বলল, ‘দেখ লিসা, তুমি চাইলে আমি একটা উবার ডেকে দিই। আর একটা কথা আমি এই অঞ্চলে একেবারেই নতুন। দেখা যাবে অন্ধকারে রাস্তা হারিয়ে অন্য কোনো বিপদে পড়ব। সেটা কি ভাল হবে?’

মেয়েটি ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে চলল। কোনো উত্তর দিল না। গাড়ি থেকে নেমে যাবারও কোনো তাগিদ দেখাল না।

‘আমি কি রাইড ক্যান্সেল করে দিব?’ 

মেয়েটি অনুনয় করে মাথা নাড়িয়ে জানাল—না।

ফাহিম একটু ভেবে নিয়ে বলল, ‘আমি হিসেব করে দেখলাম, তোমার ভাড়া আসবে প্রায় প্রায় ১৪০ ডলারের মত। তুমি আমাকে ডাবল ফেয়ার দিতে চেয়েছ, সেক্ষেত্রে তোমার খরচ হবে ২৮০ ডলার।’

মেয়েটি কান্না বন্ধ করে তাকাল ফাহিমের দিকে।

ফাহিম বলল, ‘তোমাকে বরং আমি একটা হোটেলে নামিয়ে দেই। তুমি রাতটা থেকে সকালে উঠেই বাস ধরে চলে যেও। তাতে তোমার বেশ কিছু টাকা সাশ্রয় হবে। এয়ারপোর্টের কাছে বেশ কিছু হোটেল আছে, তুমি চাইলে ওখানে নিয়ে যাই তোমাকে।’ 
কোনো কথা না বলে মেয়েটি আবার কান্না শুরু করল। 

এবার ফাহিমের মনে অন্য আশঙ্কা দেখা দিলো। এমনও হতে পারে, মেয়েটি অভিনয় করছে। দেখা যাবে সে হাইওয়েতে ওঠামাত্রই একদল গ্যাং তার গাড়ি থামিয়ে সবকিছু ছিনতাই করে নিয়ে যাবে। কিছুই বলা যায় না। ফাহিম আবার তাকাল মেয়েটির দিকে। নাহ, এই মেয়েকে দেখে তেমন মনে হচ্ছে না। মেয়েটি তাহলে সত্যিই কোনো বিপদে পড়েছে। ওর বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গেই বড়ো একটা ঝামেলা হয়েছে, কোনো সন্দেহ নেই।
ফাহিম তার ফোনে ওয়েদার চ্যানেলের অ্যাপ থেকে বাকি রাতের ওয়েদার ফোরকাস্ট দেখে মেয়েটির দিকে আবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল।

‘যে কোনো মুহূর্তে থান্ডারস্টর্ম শুরু হবে। এ অবস্থায় রাস্তায় বের হওয়াটা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তুমি কি বুঝতে পারছ কেন চার চারজন উবার ড্রাইভার তোমার রাইড ক্যান্সেল করেছে?’

মেয়েটি নিরুত্তর।

‘চল তোমাকে হোটেলে নামিয়ে দিই। আর না হয় তোমার বয়ফ্রেন্ডের কাছে—যেখান থেকে এসেছি সেখানে।’

‘না।’ অনেক কঠিন স্বরে মেয়েটি বলল।

এ তো ভালো যন্ত্রণায় পড়া গেল। কেন যে এই রাইড রিকোয়েস্ট সে না বুঝেই নিতে রাজি হয়েছিল। আর উবারই বা তাকে কেন চালাতে হবে, তার কি টাকার অভাব আছে? সময় কাটানোর আর কি কোনো উপায় ছিল না? নিজের ওপর প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ হল ফাহিমের।

আচ্ছা পুলিশ ডাকলে কি কিছু হবে? না কি উবার সার্ভিসে কল করে একটা পরামর্শ চাইবে? ফাহিম আবার তাকাল মেয়েটির দিকে। মায়া জড়ানো এক জোড়া দীঘল চোখ। সে চোখে উৎকণ্ঠা। হঠাৎ ফাহিমের মধ্যে এক ধরনের পরিবর্তন এল—কী মনে করে সে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল, মেয়েটিকে তার নিরাপদ গন্তব্যে সে পৌঁছে দেবে। এই মনোভাব পরিবর্তনের কোনো হেতু অবশ্য বোঝা গেল না। 

ফাহিম গাড়ি ছেড়ে দিয়ে হাইওয়েতে ওঠার আগেই একটা গ্যাস স্টেশন থেকে গ্যাস ভরে নিল। কয়েকটি পানির বোতল, কিছু হালকা স্ন্যাকস আর নিজের জন্য একটা কফিও নিল। অতঃপর আল্লাহ ভরসা বলে ইন্টারস্টেট হাইওয়ে আই-৯৫ এ উঠে গতি বাড়িয়ে দিল।
কিছুদূর যেয়েই রিয়ার ভিউ মিররে একবার তাকাল মেয়েটির দিকে ফাহিম। অবাক এবং কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে মেয়েটি তাকিয়ে আছে তার চোখের দিকে। ফাহিম মৃদু হেসে তাকে আস্বস্ত করল।

শরীর থেকে সব টেনশন ঝেড়ে ফেলে আবেশে চোখ বন্ধ করল মেয়েটি। এবং অল্প সময়ের মধ্যে ঘুমিয়েও পড়ল। ফাহিম মোটেও অবাক হল না। এটি একটি কমন দৃশ্য—লেট নাইট প্যাসেঞ্জাররা গাড়িতে উঠেই ঘুমিয়ে পড়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই—অ্যালকোহলের প্রভাবেই এটা হয়।
  
হাইওয়েতে তেমন কোনো গাড়ির চলাচল নেই। হঠাৎ হঠাৎ ১৮ চাকার দূরপাল্লার লরি পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। উলটো দিক থেকেও গাড়ির সংখ্যা কম। ভূতুড়ে অন্ধকারে ফাহিমের নিসান আল্টিমা এগিয়ে চলল। ভিউ মিররে পেছনে তাকাল সে, কেমন নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে মেয়েটি। বেশ কিছুক্ষণ ড্রাইভ করার পর ফাহিম একবার ওডোমিটার দেখল। মাত্র ৫০ মাইল চালানো হয়েছে। সময়ের হিসেবে প্রায় এক ঘণ্টা চালিয়েছে সে। বাকি পথটুকু যেতে কত সময় লাগবে মনে মনে এমন একটি হিসেব করছিল ফাহিম আর ঠিক তখনই আচমকা শুরু হল মুষলধারে বৃষ্টি, সাথে দমকা হাওয়া আর বিদ্যুতের ঝলকানি। জর্জিয়া স্টেটের সাভানা আর ফ্লোরিডা স্টেটের জ্যাকসনভিল—আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলীয় পাশাপাশি দুটি শহর। বৃষ্টির তীব্রতাই বলে দেয় এই বৃষ্টি সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি। ঝড়ো হাওয়া আর বৃষ্টির তীব্রতা এতই বেড়ে গেল যে ফুলস্পিডে উইন্ডশিল্ড ওয়াইপার ছেড়ে দিয়েও গাড়ির সামনের কাচ ভেদ করে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ফাহিম বাধ্য হয়ে গাড়ির গতি আরও কমিয়ে দিলো। বাতাসের জোর এতই বেড়ে গেল যেন মনে হচ্ছে গাড়ি যে-কোনো মুহূর্তে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। ফাহিম হাইওয়ে ইমের্জেন্সি লেনে গাড়ি দাঁড় করাল—ইমের্জেন্সি লাইট জ্বালিয়ে বসে রইল চুপচাপ।  

হঠাৎ বজ্রপাতের তীব্র শব্দে লিসার ঘুম ভেঙে গেল। সে চোখ মেলে তাকিয়ে কিছুই বুঝতে পারল না। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘আমি এখানে কেন?’ 

ফাহিম ঘাড় ঘুরিয়ে একবার তাকাল লিসার দিকে, কিছু না বলে আবার তাকাল সামনে।
‘তুমি কে?’ অনিশ্চিত স্বরে জিজ্ঞেস করল লিসা।

‘আমি কে মানে?’ ফাহিম বিরক্ত হয়ে বলল, ‘আই’ম ইয়োর ড্রাইভার ম্যাডাম, আপনাকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার মহান দায়িত্ব নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। এখন এই দূর্যোগের মধ্যে বসে রয়েছি। দেখতে পাচ্ছেন? বুঝতে পারছেন কিছু?’

লিসা কিছু বুঝতে পারল বলে মনে হল না—সে ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে রইল। 

(১ম পর্বের সমাপ্তি)

ফরহাদ হোসেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *